আজ দীপ্তর ছুটির দিন।
ছুটির দিনগুলোতে দীপ্তর মনটা একটু বেশিই ভালো থাকে, কারণ সে অপেক্ষা করে অন্তর্নীলার সঙ্গে দেখা হওয়ার জন্য। যেদিন দেখা হয় না, সেদিন দীপ্তর মনটা খুব কষ্ট পায়। হু হু করে কাঁদতে চায় মন, কিন্তু সে কাওকে কিছু বলতে পারে না। কারণ কেউ তো বুঝবে না…
আজ অন্তর্নীলা কথা দিয়েছে — সে পড়ন্ত বিকেলে গঙ্গার ঘাটে আসবে।
দীপ্ত সারাদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে, আর অবশেষে সেই বহু প্রতীক্ষিত দেখা হয়।
দীপ্তর চোখে-মুখে তখন শুধুই আনন্দের ছোঁয়া।
ওর সমস্তটুকু জুড়েই যে অন্তর্নীলা…
অন্তর্নীলার হাতটা ধরে দীপ্ত একনাগাড়ে অনেক কথা বলতে থাকে।
অন্তর্নীলা চুপ করে শোনে, তার চোখে-মুখে নরম প্রশান্তি।
দীপ্ত বলল:
“জানো, তুমি যখন চলে যাওয়ার কথা বলো… আমার বুকটা কী সাংঘাতিকভাবে কেঁপে ওঠে
তুমি বলো — ‘চলে গেলে এমন কী হবে?’
হয়তো কিছুই হবে না… তবে আমি ভুলে যাবো মন খুলে হাসতে।
ভুলে যাবো আপনজনকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতে।
নিজের খেয়াল রাখতে পারবো না ঠিকঠাক, কারণ তুমি আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছো।
অফিসে কী পরব, সেটাও বুঝতে পারি না — সেটাও তুমি ঠিক করে দাও।তুমি চলে গেলে হয়তো আবার দেখা হবে আমাদের কোনোদিন,
তখন এই ছেড়ে যাওয়ার কথাগুলো হয়তো মনে থাকবে না।
আর মনে থাকলেও কিছুই বদলাবে না কখনও…
আমি যে তোমায় ভালোবেসেই যাবো তখনও…তবে ছেড়ে যেও না আমায় —
তুমি ছাড়া আমি যে বড়ো অসহায়! ”
অন্তর্নীলা দীপ্তর হাতটা চেপে ধরে হালকা একটা হাসি দিয়ে বলে —
“বলেছি না, জড়িয়ে থাকবো সারাজীবন… তোমার বুকে মুখ লুকিয়ে ”